ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্ষীরমোহনের  বিখ্যাত কুড়িগ্রাম

নাগরিক প্রতিদিন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ৫০৮ বার পড়া হয়েছে
Nagorik Pratidin অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নাগরিক প্রতিদিন এর আজকের আয়োজনে রয়েছে ক্ষীরমোহনের  বিখ্যাত কুড়িগ্রাম।
কুড়িগ্রাম জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।উপজেলার সংখ্যানুসারে কুড়িগ্রাম বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।

কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণের ইতিহাস নিয়ে অনেক কিংবদন্তি রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নাতীত বা সন্দেহমুক্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সবই কিংবদন্তি ও প্রচলিত লোকশ্রুতি। তার কিছু কিছু বিষয় সমর্থনযোগ্য মনে হতে পারে। জানা যায়, কোন এক সময় মহারাজা বিশ্ব সিংহ কুড়িটি জেলে পরিবারকে উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুরূপে স্বীকৃতি দিয়ে এ অঞ্চলে প্রেরণ করেন। এ কুড়িটি পরিবারের আগমনের কাহিনী থেকে কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশের জেলা নামকরণের ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, এখানে কুড়িটি মেচ্ তৈলজীবী পরিবারের বসতি ছিল বলে এ রকম নামকরণ হয়েছে। অন্য আরেকটি লোকশ্রুতি হলো : রঙ্গপুর অর্থাৎ এই অঞ্চল একদা ছিল কুচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত। কুচবিহারের বাসিন্দাদের বলা হয় কোচ। এরা তিওড় গোষ্ঠীবিশেষও। মাছ ধরে বিক্রি করা তাদের পেশা। সুবিধাবঞ্চিত নিচু শ্রেণীর এই হিন্দু কোচদের কুড়িটি পরিবারকে সেখান থেকে এখানে প্রেরণ করা হয়েছিল বা আনয়ন করা হয়েছিল বসতি স্থাপনে জন্য। ওই কুড়িটি কোচ পরিবারের কারণে ‘কুড়িগ্রাম’ নামকরণ হয়েছে। আবার এমনও জানা যায়, এই গ্রামে কুরি বা কুরী নামক একটি হিন্দু আদিবাসী বা নৃগোষ্ঠী বসবাস করত বলেই অঞ্চলটির নাম হয় ‘কুড়িগ্রাম’। অদ্যাবধি এখানে ‘কুরি’ নামক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস লক্ষ্য করা যায়। এখনও এ অঞ্চলে কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি চালু রয়েছে। বিশিষ্ট পণ্ডিত জা পলিলুস্কি প্রমাণ করেছেন, গণনার এ পদ্ধতি বাংলায় এসেছে কোল ভাষা থেকে। কোল অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। আরব অস্ট্রিক ভাষায় কুর বা কোর ধাতুর অর্থ হলো মানুষ। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতিটিও এসেছে মানুষ থেকেই। এ অস্ট্রিক কারা? পন্ডিতদের মতে, প্রত্নপ্রস্তর যুগে এ অঞ্চলে বাস করত নিগ্রো জাতি। এরপর আসে নব্যপ্রস্তর যুগ।

 আসামের উপত্যকা অতিক্রম করে আসে অস্ট্রিক জাতীয় জনগোষ্ঠী। তারপরে আসে দ্রাবিড় ও মঙ্গোলীয়রা। এদের মিলিত স্রোতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মানবসভ্যতার সূচনা হয়। এরাই লাঙ্গল দিয়ে চাষের প্রবর্তন করেছে। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি করেছে চালু। নদনদীতে ডিঙি বেয়েছে, খেয়েছে শুঁটকি, খেয়েছে বাইগন বা বেগুন, লাউ বা কদু, কদলী বা কলা, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা। করেছে পশু পালন। এঁকেছে কপালে সিঁন্দুর। করেছে রেশম চাষ। করেছে তামা, ব্রোঞ্জ ও সোনার ব্যবহার। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করত ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। 
১৮৫৮ সালের পর শাসনকার্যের ক্ষমতা চলে যায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে। এই ব্রিটিশ সরকারের আমলে কুরিগঞ্জ চারটি থানায় বিভক্ত ছিল। পরে ১৮৭৫ সালে ২২ এপ্রিল তারিখে একটি নতুন মহকুমার গোড়াপত্তন হয়। এ মহকুমার নাম ‘কুড়িগ্রাম’। কুড়িগ্রামঘেষা ব্রহ্মপুত্রের কারণে এখানে আসে বিভিন্ন আদিম জনগোষ্ঠী। এসব কারণে এখানে গড়ে উঠেছিল একটি সভ্যতাও। বিজিত আর্যদের কোন স্মৃতি এখানে নেই। তবে অন্যদের কিছু কিছু ক্ষীয়মাণ রাজচিহ্ন রয়েছে। বারো বা দ্বাদশ শতকের প্রথমপর্বে এ অঞ্চলে সেন রাজবংশের শাসনকাল আরম্ভ হয়। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চত্রা নামক গ্রামে এদের রাজধানী ছিল। এ বংশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রাজার নাম নীলধ্বজ সেন, চক্রধ্বজ সেন, নীলাম্বর সেন।

ঢাকা টু কুড়িগ্রাম এর দূরত্ব হলো 405 কিলোমিটার, এবং এই রোডটি যাতায়াত করতে একটি ট্রেনের সময় লাগে 10 ঘণ্টা 10 মিনিট। দীর্ঘ এই রুটে চলাচল করার জন্য একজন মানুষকে অবশ্যই এই রুটের বিস্তারিত তথ্য জানা দরকার।

কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস (ট্রেন নং ৭৯৭/৭৯৮) বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশের একটি আন্তঃনগর ট্রেন।এটি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে চলাচল করে। ট্রেনটি যাত্রাপথে নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর ও রংপুর জেলাকে সংযুক্ত করেছে।

ভ্রমণ পিপাসুরা যেতে পারেন কুড়িগ্রাম জেলায়। সেখানে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে অন্যতম- চান্দামারী মসজিদ, শাহী মসজিদ, চণ্ডী মন্দির, দোলমঞ্চ মন্দির, ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি, চিলমারী বন্দর, মোগলবাসা ভাটলার সুইচগেট, ধরলা ব্রিজের পাড়- পিকনিক ষ্পট, ঘোগাদহ বাজার। কুড়িগ্রাম জেলার উত্তরে রয়েছে লালমনিরহাট জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা। দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ধুবড়ী জেলা ও দক্ষিণ শালমারা মানকার চর জেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট জেলা ও রংপুর জেলা অবস্থিত।

চিলমারী বন্দর বিভিন্ন উৎসবে লাখো মানুষের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠে। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসুরা ছুটে আসে। সব বয়সী মনুষের পছন্দের জায়গা এটি। চিলমারি বন্দর সংলগ্ন ব্রক্ষপুত্র দিয়ে ব্রিটিশ আমলের মতো বড় বড় জাহাজ চলাচল না করলেও নৌপরিবহন ব্যবসাটি এখনোও টিকে আছে।

বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি থাকলেও ভ্রমনের জন্য বছরের যে কোন সময়ই যাওয়া যায়। বৃষ্টির সময় নদীতে পানি অনেক বেশি হয়ে বন্যার আশংকা দেখা দিলে গেইটটি বন্ধ করে দিয়ে নদীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর দক্ষিনে লম্বা গেইটটিতে সর্বমোট ১৬ টি গেইট রয়েছে।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন চান্দামারী। মসজিদটিতে সুলতানী আমলের শিল্প বৈশিষ্ট্য ও মোগল স্থাপত্যকলার সমন্বয় ঘটেছে। মোঘল আমলের এই মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্ভুজ ও তিনটি মেহরাব। মসজিদটির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ায়। সড়কপথে রাজারহাট উপজেলা থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মসজিদটি অবস্থিত।

বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি থাকলেও ভ্রমনের জন্য বছরের যে কোন সময়ই যাওয়া যায়। বৃষ্টির সময় নদীতে পানি অনেক বেশি হয়ে বন্যার আশংকা দেখা দিলে গেইটটি বন্ধ করে দিয়ে নদীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর দক্ষিনে লম্বা গেইটটিতে সর্বমোট ১৬ টি গেইট রয়েছে।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন চান্দামারী। মসজিদটিতে সুলতানী আমলের শিল্প বৈশিষ্ট্য ও মোগল স্থাপত্যকলার সমন্বয় ঘটেছে। মোঘল আমলের এই মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্ভুজ ও তিনটি মেহরাব। মসজিদটির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ায়। সড়কপথে রাজারহাট উপজেলা থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মসজিদটি অবস্থিত।

ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যেতে পারেন। কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটোরিক্সায় করে যেতে হবে রাজাবাজার হাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, কার্যালয়ের কাছেই রয়েছে মসজিদটি। চান্দামারী মসজিদ ছাড়াও কুড়িগ্রামে আরো অনেক দৃষ্টিনন্দন মসজিদ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম শাহী মসজিদ।

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নির্মিত মন্দিরটি দেখতে অনেকটা কালীমন্দিরের ন্যায়। ভূমিকম্পে এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখানে নতুন একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। বাহারবন্দ পরগণার সদর দপ্তর এবং জমিদার ছিলেন রাণী সত্যবর্তী। তিনি এখানেই ছিলেন। কালীমন্দির নামে আরেকটি মন্দির ধামশ্রেণীতে সিদ্ধেশ্বরী  রয়েছে।

চন্ডিমন্দিরটি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদর থেকে ৩ কিমি পূর্বদিকে ধামশ্রেণী নামক স্থানে অবস্থিত। ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়, কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর অটোরিক্সায় করে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় যাবেন, তার পাশেই মন্দিরটি রয়েছে।

শাহী মসজিদঃ মসজিদের সামনেই রয়েছে মনোরম সুন্দর দিঘি। চারপাশে ৩ ফুট উঁচু প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত মসজিদের সামনে রয়েছে ৩টি দরজা ছাড়াও একটি সুদৃশ্য প্রবেশ তোরণ, ২টি মিনার এবং চার কোণায় ৪টি উচুঁ মিনার রয়েছে। মিনারগুলোর পাশে আছে আরো ৮টি ছোট ছোট মিনার । ৩টি বড় আকৃতির গম্বুজ রয়েছে ছাদের মাঝখানে। মসজিদটিতে কোন শিলালিপি না থাকলেও অনুমান করা হয় মোগল স্থাপত্যশৈলিতে নির্মিত মসজিদটি ২০০ বছরের পুরাতন ।

এখানে রয়েছে আরো দৃষ্টি নন্দন স্থান সমূহ  যা দেখার মাধ্যমে আমাদের মন প্রশান্তি এনে দিবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com

ক্ষীরমোহনের  বিখ্যাত কুড়িগ্রাম

আপডেট সময় : ১২:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

নাগরিক প্রতিদিন এর আজকের আয়োজনে রয়েছে ক্ষীরমোহনের  বিখ্যাত কুড়িগ্রাম।
কুড়িগ্রাম জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।উপজেলার সংখ্যানুসারে কুড়িগ্রাম বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।

কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণের ইতিহাস নিয়ে অনেক কিংবদন্তি রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নাতীত বা সন্দেহমুক্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সবই কিংবদন্তি ও প্রচলিত লোকশ্রুতি। তার কিছু কিছু বিষয় সমর্থনযোগ্য মনে হতে পারে। জানা যায়, কোন এক সময় মহারাজা বিশ্ব সিংহ কুড়িটি জেলে পরিবারকে উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুরূপে স্বীকৃতি দিয়ে এ অঞ্চলে প্রেরণ করেন। এ কুড়িটি পরিবারের আগমনের কাহিনী থেকে কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশের জেলা নামকরণের ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, এখানে কুড়িটি মেচ্ তৈলজীবী পরিবারের বসতি ছিল বলে এ রকম নামকরণ হয়েছে। অন্য আরেকটি লোকশ্রুতি হলো : রঙ্গপুর অর্থাৎ এই অঞ্চল একদা ছিল কুচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত। কুচবিহারের বাসিন্দাদের বলা হয় কোচ। এরা তিওড় গোষ্ঠীবিশেষও। মাছ ধরে বিক্রি করা তাদের পেশা। সুবিধাবঞ্চিত নিচু শ্রেণীর এই হিন্দু কোচদের কুড়িটি পরিবারকে সেখান থেকে এখানে প্রেরণ করা হয়েছিল বা আনয়ন করা হয়েছিল বসতি স্থাপনে জন্য। ওই কুড়িটি কোচ পরিবারের কারণে ‘কুড়িগ্রাম’ নামকরণ হয়েছে। আবার এমনও জানা যায়, এই গ্রামে কুরি বা কুরী নামক একটি হিন্দু আদিবাসী বা নৃগোষ্ঠী বসবাস করত বলেই অঞ্চলটির নাম হয় ‘কুড়িগ্রাম’। অদ্যাবধি এখানে ‘কুরি’ নামক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস লক্ষ্য করা যায়। এখনও এ অঞ্চলে কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি চালু রয়েছে। বিশিষ্ট পণ্ডিত জা পলিলুস্কি প্রমাণ করেছেন, গণনার এ পদ্ধতি বাংলায় এসেছে কোল ভাষা থেকে। কোল অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। আরব অস্ট্রিক ভাষায় কুর বা কোর ধাতুর অর্থ হলো মানুষ। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতিটিও এসেছে মানুষ থেকেই। এ অস্ট্রিক কারা? পন্ডিতদের মতে, প্রত্নপ্রস্তর যুগে এ অঞ্চলে বাস করত নিগ্রো জাতি। এরপর আসে নব্যপ্রস্তর যুগ।

 আসামের উপত্যকা অতিক্রম করে আসে অস্ট্রিক জাতীয় জনগোষ্ঠী। তারপরে আসে দ্রাবিড় ও মঙ্গোলীয়রা। এদের মিলিত স্রোতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মানবসভ্যতার সূচনা হয়। এরাই লাঙ্গল দিয়ে চাষের প্রবর্তন করেছে। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি করেছে চালু। নদনদীতে ডিঙি বেয়েছে, খেয়েছে শুঁটকি, খেয়েছে বাইগন বা বেগুন, লাউ বা কদু, কদলী বা কলা, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা। করেছে পশু পালন। এঁকেছে কপালে সিঁন্দুর। করেছে রেশম চাষ। করেছে তামা, ব্রোঞ্জ ও সোনার ব্যবহার। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করত ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। 
১৮৫৮ সালের পর শাসনকার্যের ক্ষমতা চলে যায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে। এই ব্রিটিশ সরকারের আমলে কুরিগঞ্জ চারটি থানায় বিভক্ত ছিল। পরে ১৮৭৫ সালে ২২ এপ্রিল তারিখে একটি নতুন মহকুমার গোড়াপত্তন হয়। এ মহকুমার নাম ‘কুড়িগ্রাম’। কুড়িগ্রামঘেষা ব্রহ্মপুত্রের কারণে এখানে আসে বিভিন্ন আদিম জনগোষ্ঠী। এসব কারণে এখানে গড়ে উঠেছিল একটি সভ্যতাও। বিজিত আর্যদের কোন স্মৃতি এখানে নেই। তবে অন্যদের কিছু কিছু ক্ষীয়মাণ রাজচিহ্ন রয়েছে। বারো বা দ্বাদশ শতকের প্রথমপর্বে এ অঞ্চলে সেন রাজবংশের শাসনকাল আরম্ভ হয়। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চত্রা নামক গ্রামে এদের রাজধানী ছিল। এ বংশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রাজার নাম নীলধ্বজ সেন, চক্রধ্বজ সেন, নীলাম্বর সেন।

ঢাকা টু কুড়িগ্রাম এর দূরত্ব হলো 405 কিলোমিটার, এবং এই রোডটি যাতায়াত করতে একটি ট্রেনের সময় লাগে 10 ঘণ্টা 10 মিনিট। দীর্ঘ এই রুটে চলাচল করার জন্য একজন মানুষকে অবশ্যই এই রুটের বিস্তারিত তথ্য জানা দরকার।

কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস (ট্রেন নং ৭৯৭/৭৯৮) বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশের একটি আন্তঃনগর ট্রেন।এটি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে চলাচল করে। ট্রেনটি যাত্রাপথে নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর ও রংপুর জেলাকে সংযুক্ত করেছে।

ভ্রমণ পিপাসুরা যেতে পারেন কুড়িগ্রাম জেলায়। সেখানে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে অন্যতম- চান্দামারী মসজিদ, শাহী মসজিদ, চণ্ডী মন্দির, দোলমঞ্চ মন্দির, ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি, চিলমারী বন্দর, মোগলবাসা ভাটলার সুইচগেট, ধরলা ব্রিজের পাড়- পিকনিক ষ্পট, ঘোগাদহ বাজার। কুড়িগ্রাম জেলার উত্তরে রয়েছে লালমনিরহাট জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা। দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ধুবড়ী জেলা ও দক্ষিণ শালমারা মানকার চর জেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট জেলা ও রংপুর জেলা অবস্থিত।

চিলমারী বন্দর বিভিন্ন উৎসবে লাখো মানুষের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠে। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসুরা ছুটে আসে। সব বয়সী মনুষের পছন্দের জায়গা এটি। চিলমারি বন্দর সংলগ্ন ব্রক্ষপুত্র দিয়ে ব্রিটিশ আমলের মতো বড় বড় জাহাজ চলাচল না করলেও নৌপরিবহন ব্যবসাটি এখনোও টিকে আছে।

বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি থাকলেও ভ্রমনের জন্য বছরের যে কোন সময়ই যাওয়া যায়। বৃষ্টির সময় নদীতে পানি অনেক বেশি হয়ে বন্যার আশংকা দেখা দিলে গেইটটি বন্ধ করে দিয়ে নদীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর দক্ষিনে লম্বা গেইটটিতে সর্বমোট ১৬ টি গেইট রয়েছে।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন চান্দামারী। মসজিদটিতে সুলতানী আমলের শিল্প বৈশিষ্ট্য ও মোগল স্থাপত্যকলার সমন্বয় ঘটেছে। মোঘল আমলের এই মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্ভুজ ও তিনটি মেহরাব। মসজিদটির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ায়। সড়কপথে রাজারহাট উপজেলা থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মসজিদটি অবস্থিত।

বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি থাকলেও ভ্রমনের জন্য বছরের যে কোন সময়ই যাওয়া যায়। বৃষ্টির সময় নদীতে পানি অনেক বেশি হয়ে বন্যার আশংকা দেখা দিলে গেইটটি বন্ধ করে দিয়ে নদীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর দক্ষিনে লম্বা গেইটটিতে সর্বমোট ১৬ টি গেইট রয়েছে।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন চান্দামারী। মসজিদটিতে সুলতানী আমলের শিল্প বৈশিষ্ট্য ও মোগল স্থাপত্যকলার সমন্বয় ঘটেছে। মোঘল আমলের এই মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্ভুজ ও তিনটি মেহরাব। মসজিদটির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ায়। সড়কপথে রাজারহাট উপজেলা থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মসজিদটি অবস্থিত।

ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যেতে পারেন। কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটোরিক্সায় করে যেতে হবে রাজাবাজার হাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, কার্যালয়ের কাছেই রয়েছে মসজিদটি। চান্দামারী মসজিদ ছাড়াও কুড়িগ্রামে আরো অনেক দৃষ্টিনন্দন মসজিদ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম শাহী মসজিদ।

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নির্মিত মন্দিরটি দেখতে অনেকটা কালীমন্দিরের ন্যায়। ভূমিকম্পে এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখানে নতুন একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। বাহারবন্দ পরগণার সদর দপ্তর এবং জমিদার ছিলেন রাণী সত্যবর্তী। তিনি এখানেই ছিলেন। কালীমন্দির নামে আরেকটি মন্দির ধামশ্রেণীতে সিদ্ধেশ্বরী  রয়েছে।

চন্ডিমন্দিরটি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদর থেকে ৩ কিমি পূর্বদিকে ধামশ্রেণী নামক স্থানে অবস্থিত। ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়, কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর অটোরিক্সায় করে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় যাবেন, তার পাশেই মন্দিরটি রয়েছে।

শাহী মসজিদঃ মসজিদের সামনেই রয়েছে মনোরম সুন্দর দিঘি। চারপাশে ৩ ফুট উঁচু প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত মসজিদের সামনে রয়েছে ৩টি দরজা ছাড়াও একটি সুদৃশ্য প্রবেশ তোরণ, ২টি মিনার এবং চার কোণায় ৪টি উচুঁ মিনার রয়েছে। মিনারগুলোর পাশে আছে আরো ৮টি ছোট ছোট মিনার । ৩টি বড় আকৃতির গম্বুজ রয়েছে ছাদের মাঝখানে। মসজিদটিতে কোন শিলালিপি না থাকলেও অনুমান করা হয় মোগল স্থাপত্যশৈলিতে নির্মিত মসজিদটি ২০০ বছরের পুরাতন ।

এখানে রয়েছে আরো দৃষ্টি নন্দন স্থান সমূহ  যা দেখার মাধ্যমে আমাদের মন প্রশান্তি এনে দিবে।